শিশুশ্রম অনুচ্ছেদ
“ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে অর্থাৎ শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজ যারা শিশু আগামী দিনে তাদের ওপরই ন্যস্ত হবে দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব। কিন্তু নানা কারণে শিশুরা আজ উপযুক্ত পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত। জীবিকার প্রয়ােজনে তারা বাধ্য হচ্ছে শ্রমদানে। বর্তমানে শিশুদের সুন্দর শৈশব ও বিকশিত জীবনের সবচেয়ে বড় বাধা এ শিশুশ্রম। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের আনুমানিক শ্রমশক্তির শতকরা ১৫ ভাগই শিশু। শিশুদের এ বিরাট অংশ শ্রমদান করতে বাধ্য হয় আর্থসামাজিক পরিস্থিতির কারণে। এ দেশের শতকরা ৪০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এসব মানুষ বাধ্য হয়ে বাড়তি উপার্জনের জন্য তাদের সন্তানদের ঝুকিপূর্ণ নানা কাজে নিয়ােজিত করে। রাজনৈতিক বিপর্যয়, সাম্প্রদায়িকতা, উদ্বাস্তু জীবনের ছিন্নমূলতা, পিতামাতার নৃশংস আচরণ, পিতামাতার পঙ্গুত্ব ইত্যাদি কারণে শিশুশ্রমের প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশুশ্রমের কারণে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও অর্ধেকের বেশি শিশু অকালে ঝরে পড়ে। অর্থাৎ শিশুশিক্ষার সাথে শিশুশ্রমের একটি বিপরীতমুখী সম্পর্ক রয়েছে। আবার শিশুরা কর্মক্ষেত্রে যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে, তা তাদের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে তারা কম বয়সে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। তারা যেমন তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি জাতি ধীরে ধীরে অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই শিশুশ্রম বন্ধের জন্য আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিশুবান্ধব সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই শিক্ষিত ও সচেতন নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে।ফলে, তারা দেশ গঠনে অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখতে পারবে।
Post a Comment