মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুচ্ছেদ
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মূলমন্ত্র হিসেবে কাজ করেছিল। এই চেতনা হৃদয়ে ধারণ করেই বাঙালি জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল বাংলাদেশকে সুখী-সমৃদ্ধশালী, উদার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। যেখানে মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল ভিত্তিই ছিল দেশপ্রেম। পাকিস্তানি হায়েনাদের কাল হাত ভেঙে দেওয়ার জন্য বাঙালি জাতি দৃঢ় সংকল্প নিয়েছিল। তাদের ইচ্ছা ছিল স্বাধীন ধর্ম নিরপেকষ একটি দেশ গড়ার। বাঙালির আশা ও প্রত্যয়ের থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের উদ্ভব ঘটে। ১৯৭১ সালে গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জন করেছিল বহু আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতা লাভের পর পরাজিত পাকিস্তানিরা বিভিন্ন অপশক্তির মাধ্যমে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করতে তৎপর হয়ে ওঠে। তারা রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভ গুলোকে বিকশিত হতে বাধা প্রদান করে। স্বাধীনতার শত্রু এদেশের কুচক্রী মহল একের পর এক ষড়যন্ত্র শুরু করে। তারা পুনরায় পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকেসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। বারবার সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে বাতিল করতে চায়। সব অপচেষ্টার অবসান ঘটিয়ে ১৯৯০ সালে গণ-অভ্যুত্থান হয়। এই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুনরায় গণতান্ত্রিক পথে নতুন যাত্রা শুরু করে। বাঙালি জাতি আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার প্রত্যয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠে। সেই চেতনা ধারণ করে দেশ ও জাতি এগিয়ে চলছে উন্নয়নের দিকে। এই অগ্রযাত্রা বিঘ্নিত করার সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাঙালি জাতিকে এগিয়ে যেতেই হবে। কেননা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই বাঙালি জাতির মুক্তির অন্যতম হাতিয়ার।
Post a Comment